মেরিন একাডেমি : নাবিক পেশায় যোগ দিচ্ছেন ১৩ নারী

মেরিন একাডেমি : নাবিক পেশায় যোগ দিচ্ছেন ১৩ নারী

ইতিহাস হতে যাচ্ছেন তাঁরা নাবিক পেশায় যোগ দিচ্ছেন ১৩ নারী ||  Daily Kalerkantho.

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো নাবিক পেশায় যোগ দিতে যাচ্ছেন ১৩ জন নারী। আগামী আগস্টে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) বিভিন্ন জাহাজে যোগ দেবেন তাঁরা। গত ডিসেম্বরে তাঁরা বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি থেকে প্রশিক্ষণ শেষ করেছেন। এ বিষয়ে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর মকসুমুল কাদের কালের কণ্ঠকে বলেন, কর্মসংস্থান তৈরির সরকারি উদ্যোগকে সফল করার জন্য বিএসসির প্রতিটি জাহাজে দুজন করে নারী মেরিন অফিসার নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। মেরিন একাডেমি থেকে প্রশিক্ষণ শেষ করে ১৩ জন নারী মেরিন অফিসার বিএসসির জাহাজে চাকরির জন্য আবেদন করেছেন।

মকসুমুল কাদের বলেন, ‘দেশে এঁরাই প্রথম নারী নাবিক, যাঁরা সমুদ্রগামী জাহাজে যোগ দিতে যাচ্ছেন। তাঁদের চাকরির সুযোগ দিয়ে বিএসসিও ইতিহাসের অংশ হতে চলেছে।’
জানা গেছে, সমুদ্রগামী জাহাজে নাবিক পদে বিশ্বের প্রথম নারী হিসেবে ১৯৪৫ সালে যোগ দিয়েছিলেন সুইডিশ এক নারী। পরবর্তী সময়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রায় আড়াই হাজার নারী সমুদ্রগামী জাহাজে অফিসার পদে যোগ দিলেও এত দিন বাংলাদেশি নারীদের কোনো সুযোগ ছিল না। পরবর্তী সময়ে মেরিন প্রশিক্ষণে নারী ক্যাডেট সংখ্যা বাড়ানোর জন্য ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অরগানাইজেশন (আইএমও) নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রায় ৬৯ বছর পর বাংলাদেশে ২০১২ সালে মেরিন প্রশিক্ষণ শুরু হয়।
গত ডিসেম্বরে বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি থেকে নটিক্যাল ও ইঞ্জিনিয়ারিং দুই শাখায় মোট ১৩ জন নারী ক্যাডেট প্রশিক্ষণ শেষ করেন। বর্তমানে দ্বিতীয় ব্যাচে তিনজন নারী ক্যাডেট রয়েছেন।
বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির কমান্ড্যান্ট ড. সাজিদ হোসাইন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বিভিন্ন বাধা-বিঘ্ন অতিক্রম করে এ দেশে প্রথমবারের মতো নারী মেরিন অফিসার সমুদ্রগামী জাহাজে যোগ দিতে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন এসব নারী মেরিন অফিসারকে চাকরির সুযোগ করে দিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করল। মেরিন একাডেমি থেকে পাস করা প্রথম ব্যাচের নারী মেরিন অফিসাররা আগামী আগস্ট মাসের শেষ দিকে বিএসসির বিভিন্ন জাহাজে যোগ দেবেন।’
সমুদ্রগামী জাহাজে নারীদের চাকরির সুযোগ প্রসঙ্গে প্রতিবেশী দেশ ভারতের উদাহরণ দিয়ে ড. সাজিদ আরো বলেন, ‘সমুদ্র পেশায় নারীদের আগ্রহী ও উৎসাহিত করার জন্য ভারতীয় সরকার ৫০ শতাংশ হ্রাসকৃত ফি এবং ন্যূনতম বয়সের ক্ষেত্রে দুই বছর শিথিল করেছে। ফলে ভারতে নৌ প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে নারী ক্যাডেটের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।’
কমান্ড্যান্ট সাজিদ হোসাইন জানান, ১৯৯৯ সালে কলকাতার সোনালী বন্দ্যোপাধ্যায় ভারতের প্রথম নারী নাবিক (মেরিন ইঞ্জিনিয়ার) হিসেবে সমুদ্রগামী জাহাজে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি প্রধান প্রকৌশলী। ২০০৪ সালের মধ্যে এ পেশায় আসেন কবিতা মিনাতুর, জ্যোতি কুমারী (বর্তমানে প্রধান প্রকৌশলী)। এর পর থেকে ভারতে নারী নাবিকের সংখ্যা বাড়তে থাকে।

যেসব দেশে নারী নাবিক আছে : সুইডেন, ডেনমার্ক, নরওয়ে, যুক্তরাজ্য, ফিনল্যান্ড, ভারত, বেলজিয়াম, জার্মানি, ইটালি, পর্তুগাল, বারমুডা, হংকং, স্পেন, তুরস্ক, জাপান, স্লোভেনিয়া, ফ্রান্স, রোমানিয়া, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া প্রভৃতি।

———————

Courtesy: http://www.kalerkantho.com/print-edition/news/2014/07/23/110151#sthash.N64e3fh4.iRFCoWkI.dpuf

Share