ইউভি ডিসইনফেক্ট্যান্ট (UV Disinfectant) ওভেন তৈরি মেরিন একাডেমিতে

ইউভি ডিসইনফেক্ট্যান্ট (UV Disinfectant) ওভেন তৈরি মেরিন একাডেমিতে

কোভিড-১৯ প্রতিরোধে ব্যবহৃত সার্জিক্যাল মাস্ক, নিত্যব্যবহার্য্য মোবাইল, চশমা, ঘড়ি, মানিব্যাগ, চাবির রিং ইত্যাদি মাত্র ২ মিনিটেই জীবাণুমুক্ত করে পুনর্ব্যবহারের উপযোগী করবে ‘ইউভি ডিসইনফেক্ট্যান্ট ওভেন’।
কর্ণফুলীর দক্ষিণ পাড়ে অবস্থিত বাংলাদেশ মেরিন একাডেমিতে আল্ট্রাভায়োলেট (ইউভি) ডিসইনফেক্ট্যান্ট ওভেনটি তৈরি করেছে। এর আগে এ একাডেমিতে কোভিড-১৯ রোগীদের শ্বাসকষ্ট প্রশমনে উদ্ভাবিত হয়েছিলো নিউমেটিক কন্ট্রোল নিয়ন্ত্রিত ভেন্টিলেটর।

আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এবং সুইডেনের ওয়ার্ল্ড মেরিটাইম ইউনিভর্সিটির পার্টনার রিলেশনে উন্নীত এই একাডেমি, সর্বাধুনিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বিশ্বমানের সুদক্ষ মেরিটাইম প্রফেশনাল তৈরি করছে। পেশাগত প্রশিক্ষণের পাশাপাশি ক্যাডেটদের উদ্ভাবনী চিন্তার বিকাশ ও বিজ্ঞান-চর্চার আদর্শ পরিবেশ রয়েছে এই একাডেমিতে। এবার ‘আল্ট্রাভায়োলেট ডিসইনফেক্ট্যান্ট ওভেন’ তৈরি হয়েছে একাডেমির ইলেক্ট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক ল্যাবে।

যন্ত্রটির ডিজাইনার একাডেমির ল্যাব প্রশিক্ষক জনাব মু. খালেদ সালাউদ্দিন বলেন, একাডেমির আধুনিক প্রযুক্তিগত পরিবেশ এবং প্রতিষ্ঠান প্রধান কমান্ড্যান্ট নৌপ্রকৌশলী ড. সাজিদ হোসেনের উৎসাহ ও সার্বিক পৃষ্ঠপোষকতা এ ধরনের উদ্ভাবনী উদ্যোগ বাস্তবায়নে সফলতা দিয়েছে।

তিনি জানান, মাস্ক হচ্ছে কোভিড-১৯ মহামারী প্রতিরোধের প্রধান হাতিয়ার। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে এ মাস্কেই করোনা ভাইরাস ৭ দিন পর্যন্ত টিকে থাকতে পারে তাই মাস্ককে প্রতিনিয়ত জীবাণুমুক্ত করা প্রয়োজন।

তার তৈরি ইউভি ওভেনে মাত্র ২ মিনিটে মাস্কসহ নিত্যব্যবহার্য জিনিসপত্র জীবাণুমুক্ত করা এবং তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবহার করা সম্ভব। এই যন্ত্রে আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি ব্যবহারের ফলে জীবাণুনাশক কেমিক্যালের ক্ষতিকর প্রভাব হতে পরিবেশ ও মানবদেহ রক্ষা পাবে এবং বারবার কেমিক্যাল কেনার অর্থ সাশ্রয় হবে। ইউভি রশ্মি ব্যবহারের পাশাপাশি যন্ত্রটিতে কনভেনশনাল ওভেনের টার্ন টেবিল, টাইমার অফ সুইচ ও ওপেন হ্যাচ কিল সুইচ ফিচার সংযোজন করার কারণে কার্যকারিতা বহুগুণে বৃদ্ধি ও নিরাপদ হয়েছে।
যন্ত্রটি বাসাবাড়ি এবং অফিসে ব্যবহার করা হলে পরিবেশ রক্ষার মাধ্যমে কোভিড-১৯ প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

একাডেমির এই বিশেষ ওভেন উদ্ভাবনের বিষয়ে একাডেমির কমান্ড্যান্ট নৌপ্রকৌশলী সাজিদ হোসেন বলেন, ইতিপূর্বে উদ্ভাবিত ভেন্টিলেটর এবং বর্তমানের এই ইউভি ওভেন একাডেমির আধুনিক কারিগরি শিক্ষাব্যবস্থার উৎকর্ষের সমৃদ্ধি প্রমাণ করে। আমাদের নিয়ন্ত্রণকারী নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় একাডেমির আধুনিকায়নে সদা সচেষ্ট এবং আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন একটি নৌপ্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়তে সার্বিক সহযোগিতা দিচ্ছে। দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের শুরু থেকেই একাডেমি অনলাইন ভিত্তিক ডিসট্যান্স অ্যাডুকেশন কার্যক্রম চালু করেছে।

এ ছাড়া ক্যাডেটদের উদ্ভাবনী সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ইতিমধ্যে একাডেমিতে একটি ‘ইনোভেশন ল্যাব’ প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, একাডেমিতে উদ্ভাবিত এ ইউভি ওভেনটি আনুষ্ঠানিক অনুমোদন প্রাপ্তি সাপেক্ষে তৈরি করে প্রাথমিক পর্যায়ে হাসপাতালে ও সরকারি অফিসে বিনামূল্যে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে যেন করোনা-মুক্ত নিরাপদ পরিবেশে স্বাভাবিক কাজকর্ম অব্যাহত রাখা যায়।

করোনা মহামারীতে পুরো দেশ যখন মহাদুর্যোগের সম্মুখীন, ঠিক সেসময়ে বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির পরপর দুটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভাবন নিঃসন্দেহে ‘করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে’ উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।

Daily Azadi, Chittagong

https://m.banglanews24.com/.daily-chittagong/news/bd/794000.details?fbclid=IwAR2za8PGc6hygoTvTWszXsqjkH248BJMmAZyXFIwnnhSG8DKdTBkTU9f1FQ

Share