[SMC Magazine ‘নোঙর’] কবিতা: মুহাম্মদ কৌশিক (৪২)
১) প্রাগৈতিহাসিক বিশ্বাস
যদি আসতেই চাও
তবে চলে এসো,
পিছনের পথটুকু কবর দিয়ে এসো।
শঙ্কার উলু ধ্বনি___দোহাই তোমার,
বাঁজি ও না আমার মর্মমূলে।
যদি আসতেই হয়-
তবে চলে এসো,
সবটুকু বিসর্জনের মন্ত্র পাঠে,
চলে এসো গভীর থেকে আরো গভীরে,
ডুব সাতারে অধিকার করে নাও, আমার আমিরে।
এখানে বিকল্প বলে কিছু নেই,
আধাআধি পথ নেই কোন।
আমি ঐ বটবৃক্ষের মত প্রাচীন,
কর্পোরেট ভাষা বুঝি না,
‘ভালবাসি’- যদি বলো-
তবে আমাকে ধারণ করো____প্রাগৈতিহাসিক বিশ্বাসে।
২) তবু কিছু রয়ে গেছে
আমার চোখে যে অজস্র রাত
বেঁধেছে আধারের বাসা,
আমি জানি সেই আধারের নীরব ভাষা।
একাকীত্বের মধ্যরাতে, তোমার
বুকের অপ্রকাশিত দীর্ঘশ্বাসে,
অজস্র রৌদ্র দুপুরের মৌন সমীরণে,
অনেক শব্দমালা পথহারা শিশু হয়ে ঘুমায়ে আছে।
ব্যস্ততায় হারিয়ে কতটা বলো ভুলে থাকা যায়?
যাই- বলে ঠিক কতদূর- কতদূর যাওয়া যায়?
শেষ বলে কোথাও কিছু নেই-
অনেক থাকা- না থাকার ভিড়ে
নেই বলে তবু কিছু রয়ে গেছে নিভৃতে।
৩) ঈশ্বরবাদ কিংবা মানবজন্ম
ঈশ্বরবাদের গল্প শুনতে শুনতে
মাঝে মাঝে ঈশ্বর হয়ে উঠতে ইচ্ছে করে,
যেমন আকাশ দেখতে দেখতে
বহুবার ভেসে গেছি আকাশ হয়ে।
যেভাবে মুক্ত বিহঙ্গের ডানায়
বেধে দিয়েছি স্বপ্নের ঘুড়ি,
বহুবার এক কাল নাগ নদ হয়ে-
মেতে উঠতে চেয়েছি সমুদ্রসঙ্গমে।
বৃক্ষের মত ঠায় দাড়িয়ে হতে চেয়েছি ইতিহাস।
যেমন দৈন দশার জীবন নিয়ে-
জীয়ন কাঠির ঘুম ভাঙ্গাতে হতে চেয়েছি রাজকুমার।
অথচ ভুলে যাই, বারবার ভুলে যাই,
সমীকরণে অনেক বেশী কাটা ছেড়া!
যে যার শুভ্রতার কাছে ফিরে যায়,
প্রতিটি অনাশ্রিত প্রাণ ফিরে যায় উষ্ণতার আশ্রয়ে।
আশ্রয়-অনাশ্রয় এই অর্থ খুঁজে খুঁজে-
কারও কারও ফিরে যেতে হয় উদ্বাস্তু শিবিরে।
ঈশ্বরবাদের গল্প শুনতে শুনতে
বহুবার আমি ঈশ্বর হয়ে উঠতে চেয়েছি,
অথচ তুমি কাছাকাছি থাকলেই
ফের মানব জন্মের দুঃখ ভুলে যেতে পারি।
——————————
মেরিন অ্যাকাডেমির ৪২তম ব্যচের ক্যাডেট মুহাম্মদ কৌশিকের অনিয়মিত লেখালিখির শুরু কলেজ জীবনে শখের বসে। তারপর এক সময় সমুদ্র জীবনে এসে অবসর সময়ে নিয়মিত লিখতে শুরু করেন ফেসবুকে- ‘অনির্বাণ রুদ্র’ নামে। ২১শে বইমেলা, ২০১৪ তে প্রথম আত্মপ্রকাশ ‘মৃন্ময়ী বসন্তে নৈশব্দের কোলাহল’ কাব্য গ্রন্থের মধ্য দিয়ে।
Recent Comments